শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনের সাথে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত এইচ.ই. মি. সাইদা শিনিচি মঙ্গলবার নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাৎকালে শ্রম খাতের সংস্কার, শিশুশ্রম ও জবরদস্তিমূলক শ্রম নিরসন, জাহাজ ভাঙা শিল্পের উন্নয়ন এবং পারস্পরিক সহযোগিতার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়।
উপদেষ্টা ড. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, শ্রম আইন সংশোধনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (ILO) ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অ্যাকশন প্ল্যানকে গুরুত্বসহকারে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। তিনি জানান, শিশুশ্রম নিরসনে ILO কনভেনশন ১৩৮ ও ১৮২ ইতোমধ্যে অনুস্বাক্ষরিত হয়েছে, এবং পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য রক্ষায় কনভেনশন ১৫৫, ১৮৭ ও ১৯০ অনুমোদনের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। জবরদস্তিমূলক শ্রম বন্ধে সংশোধিত আইনে কঠোর বিধান যুক্ত করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এশিয়া-প্যাসিফিক গ্রুপভুক্ত (ASPAG) দেশগুলোর শ্রমমন্ত্রীদের সভায় বাংলাদেশকে নতুন সমন্বয়কারী দেশ হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। এ উপলক্ষে এ বছরই একটি আঞ্চলিক শ্রমমন্ত্রী সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনার কথাও জানান উপদেষ্টা।
এ সময় তিনি রাজশাহীর জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে জাপানের সহযোগিতা কামনা করেন।
জাহাজ ভাঙা শিল্প প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, “হংকং কনভেনশন” অনুসরণ করে দেশের বেশ কয়েকটি শিপইয়ার্ড ইতোমধ্যে “গ্রিন সার্টিফিকেট” অর্জন করেছে। অবশিষ্ট ইয়ার্ডগুলোকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে সরকার কাজ করছে। এছাড়া, ২০২৬-২৭ মেয়াদের জন্য IMO কাউন্সিলের ক্যাটাগরি ‘সি’তে বাংলাদেশের প্রার্থিতায় জাপানের সমর্থন কামনা করা হয়।
জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি শ্রম আইন সংশোধনে গৃহীত ন্যাশনাল অ্যাকশন প্লান, জবরদস্তিমূলক শ্রম প্রতিরোধে বাংলাদেশের উদ্যোগ, মাতারবাড়িতে ডকইয়ার্ড নির্মাণ, এবং চট্টগ্রাম বন্দরে ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি জানান, জাপানের সাবেক শ্রমমন্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্যের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবে। দলটি শ্রমিক অধিকার, শোভন কর্মপরিবেশ ও সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন করবে।
রাষ্ট্রদূত আশ্বাস দেন, পারস্পরিক আস্থা ও সহযোগিতার ভিত্তিতে জাপান সরকারের সহায়তা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
সাক্ষাৎকালে জাপান দূতাবাসের দুই সচিব, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ উভয় মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনলাইন ডেস্ক 















