ঢাকা ০৮:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সরকারের সংস্কার-উদ্যোগে বড় বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেয়েছে দেশের অর্থনীতি: সিপিডি

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৬:৪৬:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫
  • ২০ বার পড়া হয়েছে

দেশের অর্থনীতি সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় সংকট থেকে রক্ষা পেয়েছে সরকারের সময়োপযোগী সংস্কার ও নীতিগত উদ্যোগে—এমন মন্তব্য করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থাটি মনে করে, ব্যাংক খাত সংস্কার, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি ও রপ্তানিমুখী পদক্ষেপগুলো সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা এনেছে, যদিও উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ স্থবিরতা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এখনো রয়েছে বড় চ্যালেঞ্জ।

রোববার (১০ আগস্ট) সকালে রাজধানীর গুলশানে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ৩৬৫ দিন’ শীর্ষক আয়োজিত সিপিডি ডায়ালগে এসব কথা বলেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।

ড. ফাহমিদা বলেন, “গত এক বছরে অন্তর্বর্তী সরকার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বাস্তবায়ন করেছে। এর মধ্যে ব্যাংক খাত সংস্কার ও বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনার উদ্যোগ ফল দিয়েছে। রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বেড়েছে, রিজার্ভে স্থিতিশীলতা এসেছে, মুদ্রার পতন নিয়ন্ত্রণে রাখা গেছে। এগুলো না হলে বড় ধরনের অর্থনৈতিক বিপর্যয় নেমে আসত।”

তবে সতর্ক বার্তা: সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ

সংগঠনের পক্ষ থেকে সতর্ক করে বলা হয়, মূল্যস্ফীতি এখনো উচ্চপর্যায়ে, বিনিয়োগ আসছে না, নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না,

রাজস্ব আদায় আশানুরূপ নয়।

ফাহমিদা বলেন, “পরবর্তী ৬ মাস এবং নতুন সরকারের জন্য এগুলো হবে বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ওপর মূল্যস্ফীতির প্রভাব লাঘব করতে চলমান সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি বজায় রাখা জরুরি।”

তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সময়ের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে নতুন বিনিয়োগের সম্ভাবনা খুবই কম। তবে এই সময়টিকে বিনিয়োগ-উপযোগী অবকাঠামো ও নীতিনির্ধারণে কাজে লাগানো হলে ভবিষ্যতের সরকার দ্রুত দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে পারবে।”

২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে সিপিডি নির্বাহী পরিচালক বলেন, “আগামী ছয় মাসে নতুন করে বড় কোনো সংস্কার বাস্তবায়ন হবে কি না, বলা কঠিন। তবে ইতোমধ্যে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সেগুলো ধীরগতির হলেও চালিয়ে নেওয়া হলে তা দীর্ঘমেয়াদে সুফল দিতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য নেওয়া উদ্যোগগুলো রাজনৈতিকভাবে সুরক্ষা দিয়ে ধারাবাহিকভাবে টিকিয়ে রাখা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”

ডায়ালগে উপস্থিত ছিলেন: বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী

তারা সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলোর বিশ্লেষণ তুলে ধরেন এবং অর্থনীতি পুনর্গঠনে রাজনৈতিক ঐক্যমতের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।

Tag :

সরকারের সংস্কার-উদ্যোগে বড় বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেয়েছে দেশের অর্থনীতি: সিপিডি

আপডেট সময় : ০৬:৪৬:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫

দেশের অর্থনীতি সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় সংকট থেকে রক্ষা পেয়েছে সরকারের সময়োপযোগী সংস্কার ও নীতিগত উদ্যোগে—এমন মন্তব্য করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থাটি মনে করে, ব্যাংক খাত সংস্কার, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি ও রপ্তানিমুখী পদক্ষেপগুলো সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা এনেছে, যদিও উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ স্থবিরতা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এখনো রয়েছে বড় চ্যালেঞ্জ।

রোববার (১০ আগস্ট) সকালে রাজধানীর গুলশানে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ৩৬৫ দিন’ শীর্ষক আয়োজিত সিপিডি ডায়ালগে এসব কথা বলেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।

ড. ফাহমিদা বলেন, “গত এক বছরে অন্তর্বর্তী সরকার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বাস্তবায়ন করেছে। এর মধ্যে ব্যাংক খাত সংস্কার ও বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনার উদ্যোগ ফল দিয়েছে। রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বেড়েছে, রিজার্ভে স্থিতিশীলতা এসেছে, মুদ্রার পতন নিয়ন্ত্রণে রাখা গেছে। এগুলো না হলে বড় ধরনের অর্থনৈতিক বিপর্যয় নেমে আসত।”

তবে সতর্ক বার্তা: সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ

সংগঠনের পক্ষ থেকে সতর্ক করে বলা হয়, মূল্যস্ফীতি এখনো উচ্চপর্যায়ে, বিনিয়োগ আসছে না, নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না,

রাজস্ব আদায় আশানুরূপ নয়।

ফাহমিদা বলেন, “পরবর্তী ৬ মাস এবং নতুন সরকারের জন্য এগুলো হবে বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ওপর মূল্যস্ফীতির প্রভাব লাঘব করতে চলমান সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি বজায় রাখা জরুরি।”

তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সময়ের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে নতুন বিনিয়োগের সম্ভাবনা খুবই কম। তবে এই সময়টিকে বিনিয়োগ-উপযোগী অবকাঠামো ও নীতিনির্ধারণে কাজে লাগানো হলে ভবিষ্যতের সরকার দ্রুত দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে পারবে।”

২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে সিপিডি নির্বাহী পরিচালক বলেন, “আগামী ছয় মাসে নতুন করে বড় কোনো সংস্কার বাস্তবায়ন হবে কি না, বলা কঠিন। তবে ইতোমধ্যে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সেগুলো ধীরগতির হলেও চালিয়ে নেওয়া হলে তা দীর্ঘমেয়াদে সুফল দিতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য নেওয়া উদ্যোগগুলো রাজনৈতিকভাবে সুরক্ষা দিয়ে ধারাবাহিকভাবে টিকিয়ে রাখা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”

ডায়ালগে উপস্থিত ছিলেন: বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী

তারা সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলোর বিশ্লেষণ তুলে ধরেন এবং অর্থনীতি পুনর্গঠনে রাজনৈতিক ঐক্যমতের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।