ঢাকা ০২:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জরাজীর্ণ সেতু: ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করছেন দুই ইউনিয়নের মানুষ

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৮:০৮:১৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫
  • ৩৭ বার পড়া হয়েছে

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার উত্তর বিশ্বনাথপুর এলাকায় খাঁড়া নদীর উপর নির্মিত একটি সেতু যেন এখন মৃত্যু ফাঁদ। বিরিশিরি ও গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের হাজারো মানুষ প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছেন এই সেতু দিয়ে। সেতুটির অবস্থা এতটাই নাজুক যে, উপরে কাঠের জোড়াতালি আর নিচে বাঁশের ঠেকা দিয়ে সাময়িকভাবে টিকিয়ে রাখা হয়েছে-সেটিও বিগত পাঁচ বছর ধরে!

সকাল-সন্ধ্যা এ পথে স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থী,কর্মজীবী মানুষ, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে শিশু ও বৃদ্ধরাও যাতায়াত করেন। অথচ প্রতিটি পা ফেলার সঙ্গে থাকে দুর্ঘটনার আশঙ্কা।

১৯৯৫ সালের দিকে নির্মিত এ সেতুটি সময়ের সাথে সাথে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। বর্তমানে পাকা কাঠামোর নিচে বাঁশ দিয়ে ধরে রাখা হয়েছে। এর উপর চলাচল করা হলেও যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিটি নির্বাচনের সময় জনপ্রতিনিধিরা এসে সেতু সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু নির্বাচন শেষে কেউ আর ফিরে তাকান না।

স্থানীয় বাসিন্দা আসলাম মিয়া জানান, সেতুটি অনেক বছর ধরে এমনই আছে, আমরা প্রতিনিয়ত ভয়ে ভয়ে পার হই। কখন যে ভেঙে পড়ে এই চিন্তা থাকে সারাক্ষণ। তাছাড়াও সেতুটি ভেঙ্গে পড়লে আমাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। তাই দ্রুত একটি নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।

শিক্ষার্থী রিয়াদ মিয়া জানায়, মাদ্রাসায় যেতে খুব ভয় লাগে, কখনও বাবা কখনও শিক্ষকদের হাত ধরে পার হই এই সেতু।

অটোচালক আঃ কাদির মিয়া বলেন, এপার-ওপারের ধানসহ জিনিসপত্র আনা যায় না,কখনও অসুস্থ হলেও এই সেতুর জন্য কষ্টে পড়তে হয়। শুধু সেতু নয়, এই সড়কের ৩ কিলোমিটার মাটির রাস্তাটাও খুব খারাপ। বৃষ্টিতে কাদা, রোদে ধুলা। দুর্ঘটনাও হয় প্রায়ই।

 

এ বিষয়ে দুর্গাপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান প্রতিবেদককে বলেন, সেতুর সংযোগ সড়কটি ইতোমধ্যে তালিকাভুক্তির প্রস্তাবনায় রয়েছে। পরবর্তী ধাপে সেতুটির জন্যও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সেতু কেবল একটি নির্মাণ নয়, এটি দুই পাড়ের মানুষের জীবন, জীবিকা ও ভবিষ্যতের সেতুবন্ধন। পাঁচ বছর ধরে ভরসা এক জোড়াতালির কাঠ-বাঁশ এটা আর চলতে পারে না। তাই এলাকাবাসীর দাবি, অবিলম্বে সেতুটি নতুন করে নির্মাণ করে তাদের দুর্ভোগের স্থায়ী সমাধান নিশ্চিত করা হোক।

Tag :

জরাজীর্ণ সেতু: ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করছেন দুই ইউনিয়নের মানুষ

আপডেট সময় : ০৮:০৮:১৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার উত্তর বিশ্বনাথপুর এলাকায় খাঁড়া নদীর উপর নির্মিত একটি সেতু যেন এখন মৃত্যু ফাঁদ। বিরিশিরি ও গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের হাজারো মানুষ প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছেন এই সেতু দিয়ে। সেতুটির অবস্থা এতটাই নাজুক যে, উপরে কাঠের জোড়াতালি আর নিচে বাঁশের ঠেকা দিয়ে সাময়িকভাবে টিকিয়ে রাখা হয়েছে-সেটিও বিগত পাঁচ বছর ধরে!

সকাল-সন্ধ্যা এ পথে স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থী,কর্মজীবী মানুষ, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে শিশু ও বৃদ্ধরাও যাতায়াত করেন। অথচ প্রতিটি পা ফেলার সঙ্গে থাকে দুর্ঘটনার আশঙ্কা।

১৯৯৫ সালের দিকে নির্মিত এ সেতুটি সময়ের সাথে সাথে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। বর্তমানে পাকা কাঠামোর নিচে বাঁশ দিয়ে ধরে রাখা হয়েছে। এর উপর চলাচল করা হলেও যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিটি নির্বাচনের সময় জনপ্রতিনিধিরা এসে সেতু সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু নির্বাচন শেষে কেউ আর ফিরে তাকান না।

স্থানীয় বাসিন্দা আসলাম মিয়া জানান, সেতুটি অনেক বছর ধরে এমনই আছে, আমরা প্রতিনিয়ত ভয়ে ভয়ে পার হই। কখন যে ভেঙে পড়ে এই চিন্তা থাকে সারাক্ষণ। তাছাড়াও সেতুটি ভেঙ্গে পড়লে আমাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। তাই দ্রুত একটি নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।

শিক্ষার্থী রিয়াদ মিয়া জানায়, মাদ্রাসায় যেতে খুব ভয় লাগে, কখনও বাবা কখনও শিক্ষকদের হাত ধরে পার হই এই সেতু।

অটোচালক আঃ কাদির মিয়া বলেন, এপার-ওপারের ধানসহ জিনিসপত্র আনা যায় না,কখনও অসুস্থ হলেও এই সেতুর জন্য কষ্টে পড়তে হয়। শুধু সেতু নয়, এই সড়কের ৩ কিলোমিটার মাটির রাস্তাটাও খুব খারাপ। বৃষ্টিতে কাদা, রোদে ধুলা। দুর্ঘটনাও হয় প্রায়ই।

 

এ বিষয়ে দুর্গাপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান প্রতিবেদককে বলেন, সেতুর সংযোগ সড়কটি ইতোমধ্যে তালিকাভুক্তির প্রস্তাবনায় রয়েছে। পরবর্তী ধাপে সেতুটির জন্যও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সেতু কেবল একটি নির্মাণ নয়, এটি দুই পাড়ের মানুষের জীবন, জীবিকা ও ভবিষ্যতের সেতুবন্ধন। পাঁচ বছর ধরে ভরসা এক জোড়াতালির কাঠ-বাঁশ এটা আর চলতে পারে না। তাই এলাকাবাসীর দাবি, অবিলম্বে সেতুটি নতুন করে নির্মাণ করে তাদের দুর্ভোগের স্থায়ী সমাধান নিশ্চিত করা হোক।