ঢাকা ০৫:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এনবিআরের আন্দোলনে বড় শাস্তির মুখে তিন শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৮:০৪:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫
  • ১০৬ বার পড়া হয়েছে

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর চলমান আন্দোলনের জেরে ৩৪৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী শাস্তির মুখে পড়তে পারেন। এরই মধ্যে চারজনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে এবং ২৩ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার। বাকিদের তালিকা যাচাই-বাছাই চলছে।

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ, অফিস বন্ধ রাখা এবং কর্মবিরতিতে অংশ নেওয়ার মতো কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তদন্তে প্রমাণ মিললে তালিকাভুক্তদের বিরুদ্ধেও শিগগিরই শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

গত ১২ মে এনবিআর পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে দুটি নতুন বিভাগ গঠন করে সরকার—রাজস্ব নীতিরাজস্ব ব্যবস্থাপনা। এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলনে নামেন। পরবর্তীতে ২২ জুন কিছু কর্মকর্তার বদলি আদেশ ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়। ২৪ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে তারা ওই আদেশ ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানান।

সরকার শুরুতে আশ্বাস দিলেও এরপর একে একে ১৪ জন কর্মকর্তা এবং পরবর্তীতে আরও ৯ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। একজন কর্মচারীকে এনবিআর চেয়ারম্যানকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে চাকরি হারাতে হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক) ১৬ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে।

এই ঘটনার পর এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকের অভিযোগ—ক্ষমা চাওয়ার পরও শাস্তি বন্ধ হয়নি, বরং তা আরও বেড়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একযোগে এত বড় শাস্তিমূলক পদক্ষেপে কর্মীদের মনোবল ভেঙে পড়তে পারে, যা রাজস্ব আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়া বলেন,“গণহারে শাস্তি দিলে কাজের গুণমান ও মনোযোগ কমে যায়। সরকারের উচিত ছিল আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা।”এক এনবিআর কর্মকর্তা বলেন,“যারা আশ্বাস দিয়েছিলেন, এখন তারাই আমাদের শাস্তি দিচ্ছেন। এতে রাষ্ট্রের লাভ হবে না।”

 এনবিআর চেয়ারম্যানের বক্তব্য

এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন,“এগুলো সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত। বিস্তারিত জানার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা উচিত।”

Tag :

এনবিআরের আন্দোলনে বড় শাস্তির মুখে তিন শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী

আপডেট সময় : ০৮:০৪:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর চলমান আন্দোলনের জেরে ৩৪৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী শাস্তির মুখে পড়তে পারেন। এরই মধ্যে চারজনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে এবং ২৩ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার। বাকিদের তালিকা যাচাই-বাছাই চলছে।

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ, অফিস বন্ধ রাখা এবং কর্মবিরতিতে অংশ নেওয়ার মতো কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তদন্তে প্রমাণ মিললে তালিকাভুক্তদের বিরুদ্ধেও শিগগিরই শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

গত ১২ মে এনবিআর পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে দুটি নতুন বিভাগ গঠন করে সরকার—রাজস্ব নীতিরাজস্ব ব্যবস্থাপনা। এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলনে নামেন। পরবর্তীতে ২২ জুন কিছু কর্মকর্তার বদলি আদেশ ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়। ২৪ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে তারা ওই আদেশ ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানান।

সরকার শুরুতে আশ্বাস দিলেও এরপর একে একে ১৪ জন কর্মকর্তা এবং পরবর্তীতে আরও ৯ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। একজন কর্মচারীকে এনবিআর চেয়ারম্যানকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে চাকরি হারাতে হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক) ১৬ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে।

এই ঘটনার পর এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকের অভিযোগ—ক্ষমা চাওয়ার পরও শাস্তি বন্ধ হয়নি, বরং তা আরও বেড়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একযোগে এত বড় শাস্তিমূলক পদক্ষেপে কর্মীদের মনোবল ভেঙে পড়তে পারে, যা রাজস্ব আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়া বলেন,“গণহারে শাস্তি দিলে কাজের গুণমান ও মনোযোগ কমে যায়। সরকারের উচিত ছিল আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা।”এক এনবিআর কর্মকর্তা বলেন,“যারা আশ্বাস দিয়েছিলেন, এখন তারাই আমাদের শাস্তি দিচ্ছেন। এতে রাষ্ট্রের লাভ হবে না।”

 এনবিআর চেয়ারম্যানের বক্তব্য

এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন,“এগুলো সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত। বিস্তারিত জানার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা উচিত।”