ঢাকা ১২:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শুল্কের পর এবার ভিসা-গ্রিন কার্ডে কড়াকড়ি, নতুন চাপে ভারত

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৭:৫৪:৩৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫
  • ৯২ বার পড়া হয়েছে

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আবারও ভারতকে বড় ধাক্কা দিতে চলেছে। সম্প্রতি ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার পর এবার অভিবাসন নীতিতেও বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন।

বিশেষ করে H-1B ভিসা ও গ্রিন কার্ড ব্যবস্থা নিয়ে মার্কিন বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিকের সাম্প্রতিক মন্তব্য ভারতীয়দের জন্য উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে।

হাওয়ার্ড লুটনিক প্রকাশ্যে জানিয়েছেন, বর্তমান H-1B ভিসা ব্যবস্থা একটি “প্রতারণা” এবং এটি মার্কিন নাগরিকদের চাকরি কেড়ে নিচ্ছে।

তার মতে, লটারিভিত্তিক এই ভিসা ব্যবস্থার পরিবর্তে উচ্চ বেতনকে প্রধান মানদণ্ড করা হবে। অর্থাৎ যাদের বেতন বেশি, তারাই অগ্রাধিকার পাবেন। এর ফলে মধ্যম আয়ের আইটি খাতে কর্মরত বিপুলসংখ্যক ভারতীয় সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।

২০২৩ অর্থবছরে অনুমোদিত মোট H-1B ভিসার প্রায় ৭২ শতাংশই ভারতীয়দের ছিল। অপরদিকে চীনের অংশীদারিত্ব মাত্র ১১.৭ শতাংশ। ফলে নীতির বড় পরিবর্তন হলে ভারতই সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়বে।

এছাড়াও গ্রিন কার্ড ব্যবস্থারও কড়া সমালোচনা করেছেন লুটনিক। তার দাবি, মার্কিন নাগরিকদের গড় আয় যেখানে ৭৫ হাজার ডলার, সেখানে গ্রিন কার্ডপ্রাপ্তদের গড় আয় মাত্র ৬৬ হাজার ডলার। তাই তিনি মনে করেন, “আমরা ভুল মানুষদের গ্রিন কার্ড দিচ্ছি।”

এই যুক্তি দেখিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন নতুন এক “গোল্ড কার্ড” কর্মসূচি চালুর পরিকল্পনা করছে। প্রস্তাবিত নিয়ম অনুযায়ী, আমেরিকায় অন্তত ৫০ লক্ষ ডলার বিনিয়োগ করলে তবেই বিদেশিরা স্থায়ী নাগরিকত্ব পাবেন।

এর মাধ্যমে প্রায় ১.২৫ ট্রিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ আসবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মার্কিন বাণিজ্য সচিব।

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নীতি কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ দক্ষতার পরিবর্তে উচ্চ মূলধনী বিনিয়োগকারীরাই সুবিধা পাবেন। এতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর্মরত ভারতীয় তরুণ প্রজন্ম সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প অতীতে একাধিকবার বলেছেন, “আমাদের সেরা মানুষগুলোকে আনতেই হবে।” অর্থাৎ দক্ষতা ও মেধা ধরে রাখার কথা বললেও নতুন সংস্কার ভারতীয় দক্ষ জনশক্তির জন্য ধাক্কা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

ফলে বলা যায়, মার্কিন বাণিজ্য নীতি ও অভিবাসন নীতির যুগপৎ কড়াকড়ি ভারতের অর্থনীতি ও শ্রমবাজারের জন্য নতুন দুশ্চিন্তা বয়ে আনতে চলেছে।

Tag :

শুল্কের পর এবার ভিসা-গ্রিন কার্ডে কড়াকড়ি, নতুন চাপে ভারত

আপডেট সময় : ০৭:৫৪:৩৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আবারও ভারতকে বড় ধাক্কা দিতে চলেছে। সম্প্রতি ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার পর এবার অভিবাসন নীতিতেও বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন।

বিশেষ করে H-1B ভিসা ও গ্রিন কার্ড ব্যবস্থা নিয়ে মার্কিন বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিকের সাম্প্রতিক মন্তব্য ভারতীয়দের জন্য উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে।

হাওয়ার্ড লুটনিক প্রকাশ্যে জানিয়েছেন, বর্তমান H-1B ভিসা ব্যবস্থা একটি “প্রতারণা” এবং এটি মার্কিন নাগরিকদের চাকরি কেড়ে নিচ্ছে।

তার মতে, লটারিভিত্তিক এই ভিসা ব্যবস্থার পরিবর্তে উচ্চ বেতনকে প্রধান মানদণ্ড করা হবে। অর্থাৎ যাদের বেতন বেশি, তারাই অগ্রাধিকার পাবেন। এর ফলে মধ্যম আয়ের আইটি খাতে কর্মরত বিপুলসংখ্যক ভারতীয় সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।

২০২৩ অর্থবছরে অনুমোদিত মোট H-1B ভিসার প্রায় ৭২ শতাংশই ভারতীয়দের ছিল। অপরদিকে চীনের অংশীদারিত্ব মাত্র ১১.৭ শতাংশ। ফলে নীতির বড় পরিবর্তন হলে ভারতই সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়বে।

এছাড়াও গ্রিন কার্ড ব্যবস্থারও কড়া সমালোচনা করেছেন লুটনিক। তার দাবি, মার্কিন নাগরিকদের গড় আয় যেখানে ৭৫ হাজার ডলার, সেখানে গ্রিন কার্ডপ্রাপ্তদের গড় আয় মাত্র ৬৬ হাজার ডলার। তাই তিনি মনে করেন, “আমরা ভুল মানুষদের গ্রিন কার্ড দিচ্ছি।”

এই যুক্তি দেখিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন নতুন এক “গোল্ড কার্ড” কর্মসূচি চালুর পরিকল্পনা করছে। প্রস্তাবিত নিয়ম অনুযায়ী, আমেরিকায় অন্তত ৫০ লক্ষ ডলার বিনিয়োগ করলে তবেই বিদেশিরা স্থায়ী নাগরিকত্ব পাবেন।

এর মাধ্যমে প্রায় ১.২৫ ট্রিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ আসবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মার্কিন বাণিজ্য সচিব।

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নীতি কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ দক্ষতার পরিবর্তে উচ্চ মূলধনী বিনিয়োগকারীরাই সুবিধা পাবেন। এতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর্মরত ভারতীয় তরুণ প্রজন্ম সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প অতীতে একাধিকবার বলেছেন, “আমাদের সেরা মানুষগুলোকে আনতেই হবে।” অর্থাৎ দক্ষতা ও মেধা ধরে রাখার কথা বললেও নতুন সংস্কার ভারতীয় দক্ষ জনশক্তির জন্য ধাক্কা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

ফলে বলা যায়, মার্কিন বাণিজ্য নীতি ও অভিবাসন নীতির যুগপৎ কড়াকড়ি ভারতের অর্থনীতি ও শ্রমবাজারের জন্য নতুন দুশ্চিন্তা বয়ে আনতে চলেছে।