সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্তে দীর্ঘসূত্রিতার প্রেক্ষাপটে তদন্ত কর্মকর্তাকে আদালতে হাজির হয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমান এ আদেশ দেন। মামলার পরবর্তী প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ১৪ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে। সেদিন তদন্ত কর্মকর্তাকে সশরীরে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে নিজ বাসায় নির্মমভাবে খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। পরদিন তাদের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়।
ঘটনার পর নিহত রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় মোট ৮ জনকে আসামি করা হয়, তাদের মধ্যে রয়েছেন—রুনির বন্ধু তানভীর রহমান, বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে মাসুম, কামরুল হাসান অরুণ, পলাশ রুদ্র পাল এবং আবু সাঈদ।
প্রথমে মামলার তদন্তভার ছিল শেরেবাংলা নগর থানার একজন এসআইয়ের ওপর। চারদিন পর সেটি হস্তান্তর করা হয় ডিবির (গোয়েন্দা পুলিশ) কাছে। কিন্তু দুই মাসের মধ্যে কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্টের নির্দেশে মামলাটি হস্তান্তর করা হয় র্যাবের কাছে।
সর্বশেষ, ২০২4 সালের ৩০ সেপ্টেম্বর, হাইকোর্ট বিভিন্ন বাহিনীর অভিজ্ঞ তদন্ত কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দেয়। এরপর ২০২৪ সালের ১৮ অক্টোবর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পিবিআই প্রধানকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের উচ্চপর্যায়ের টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করে। কমিটিকে ছয় মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে বলা হয়। তবে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো কোনো প্রতিবেদন দাখিল করা হয়নি।
এই মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে এতবার বিলম্ব হয়েছে যে এখন পর্যন্ত মোট ১২০ বার তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। বিষয়টি বিচারপ্রার্থী পরিবার, সাংবাদিক সমাজ এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি করেছে।
টাস্কফোর্স এখনো কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলামত ও ফরেনসিক তথ্য নিয়ে কাজ করছে। তদন্ত কর্মকর্তার আদালতে হাজির হওয়ার পর হয়তো কিছু স্পষ্ট অগ্রগতি জানা যাবে।

অনলাইন ডেস্ক 















