জাতীয় রাজস্ব বোর্ড অধীনস্থ বাংলাদেশ কাস্টমস ও ভ্যাট এবং বাংলাদেশ ইনকাম ট্যাক্স। আর এই অর্জিত রাজস্বের অর্থে পরিচালিত হয়ে থাকে বিভিন্ন সরকারি আধা সরকারি প্রতিষ্ঠান। যানাযা্য় রাজস্ব বোর্ড ভবনের দ্বিতীয় তলায় রয়েছে ১২০০ হতে ১৩০০ স্কয়ার ফিটের একটি সমিতি অফিস যার নাম হচ্ছে বাংলাদেশ কাস্টমস অফিসার এসোসিয়েশন (বাকাএভ)। এই সংগঠনটি পরিচালনা করে আসছে মজিবুর রহমান মজিব তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী । জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ভবনের প্রতিটা উইংসে চলেছে মুজিবুর রহমান এর বেপরোয়া দাপট । বিশ্বস্ত সূত্রে যানাযায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান সাহেব এর বাড়ির পাশে বাকাএভ সভাপতি মুজিবুর রহমান মজিব এর বাড়ি। সেই দাপটেই তিনি কাউকে তোয়াক্কাই করেননা বলে জানান অনেকে।
বাকাএভ এর এই সমিতি অফিস থেকে সরকার কিছু না পেলেও এটাকে তদবির বাণিজ্যের আখড়া হিসেবেই চিনেন সবাই। জানা যায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের দ্বিতীয় তলার এই সমিতির অফিসে নিয়মিত যাতায়াত করেন রাজস্ব বোর্ডের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারী। তারা সবাই আসেন সমিতির সভাপতি মুজিবুর রহমান মুজিবের কাছে উদ্দেশ্য তদবির বাণিজ্য।
মজিবুর রহমান মুজিব একজন রাজস্ব কর্মকর্তা হওয়ার কারণে বাকাএভ কে উপলক্ষ করে রাজস্বের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে তৈরি করেছেন ঘুষ বাণিজ্যের এক বিরাট চক্র। আর এই অসাধু চক্রের মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব ভবনে চলে বেপরোয়া তদবির ও ঘুষ বাণিজ্য। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা জানান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ঐক্য পরিষদের আন্দোলনের ইন্ধনদাতার মূলহোতা মজিবুর রহমান মুজিব। আরো জানা যায় এই মুজিবুর রহমান মুজিব বিগত স্বৈরাচার শাসন আমলে নিজেকে বড় আওয়ামীলীগার হিসেবে পরিচয় দিতেন।
একাধিক তথ্যসূত্রে জানা যায়, দুর্নীতিবাজ মুজিবুর রহমান মুজিবের মূল শক্তি হচ্ছে বর্তমান রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান। অর্থের বিনিময়ে দুর্নীতির ফাইল ছুটানো তদবির, বদলি বাণিজ্যের মাধ্যমে আসা অবৈধ অর্থের অংশ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মহলে নির্দিষ্ট অংশ বন্টনের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেন। বিষয়গুলো প্রকাশ্যে আশায় একাধিক কর্মকর্তা জানায় বিষয়গুলো যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত সাপেক্ষে খতিয়ে দেখার প্রয়োজন এবং দোষী কর্মকর্তাদের শাস্তির আওতায় আনা প্রয়োজন। তা না হলে অতি দ্রুত সরকারের এই বড় অর্থনৈতিক খাত ধ্বংসের মুখে পড়বে।
কানাঘুষায় আলোচনা হচ্ছে বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে একজন আওয়ামী লীগের দোসর কি করে অনিবন্ধিত একটি প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়ে রাজস্ব ভবনের মত একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় অফিস পরিচালিত করে আসছে। অথচ জানা যায়, শুধু মূল ভবনেই নয়, বিভিন্ন আঞ্চলিক কমিশনারেটের দপ্তরেও রয়েছে তাদের এই অনিবন্ধিত সংগঠনের শাখা। এবং এই শাখা অফিসগুলোতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বহিরাগতদের দিয়ে চালানো হচ্ছে জোর তদবির বাণিজ্যের মহড়া। নিয়ম-কানুন মানার লেস মাত্র নেই সেখানে। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সার্কেল অফিসের কিছু কর্মকর্তা বলেন এই বহিরাগতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কারণ বহিরাগতদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না করলে রাজস্ব ভবনের দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব নয় বলে ধারণা অনেকের।
যদিও জানা যায় এর আগে একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে একাধিকবার বহিরাগতদের বাহির করে দেওয়া হয়েছে কিন্তু কিছুদিন পর পরিবেশ স্বাভাবিক হলে বিভাগ সার্কেলের কর্তৃপক্ষের সুপারিশে আবারও অফিসে তাদেরকে যোগদান করা হয়েছে। রাজস্বের সেবা গ্রহীতাদের অনেকের মতামত নিয়ে জানা যাচ্ছে যে, দালাল, অসাধু কর্মকর্তা ও তদবির বাণিজ্য করা এই এই মহলের বিরুদ্ধে স্থায়ীভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান এর কাছে সমিতির ব্যাপারে ও বহিরাগতদের বিষয়ে জানার চেষ্টা করা হলে, চেয়ারম্যানের একজন বিশ্বস্ত লোক জানায় সমিতির নিবন্ধন আছে। কারণ নিবন্ধন ছাড়া তো একটা সমিতি চলতে পারে না।
একাধিক কর্মকর্তা কর্মচারীর কাছ থেকে জানা যায় অফিসার্স এসোসিয়েশনের সমিতি অফিসতো পুরাতন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সেগুন বাগিচা এনবিআর ভবনের নিচতলায়। এবং খোঁজ নিয়ে যা জানা যায় সেখানেও বাকাএভ এর একটি বিশাল অফিস রয়েছে।

বিশেষ প্রতিনিধি 



















