বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর রোববার রাজধানীতে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৩৬৫ দিন’ শীর্ষক সেমিনারে যোগ দিয়ে চলতি অর্থবছরে দেশের মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন। 

ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, নতুন বাংলাদেশ ব্যাংক আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, যাতে আর্থিক খাত রাজনীতির ঊর্ধ্বে থাকে এবং কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ বা দুর্বৃত্তায়ন না ঘটে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে দায়বদ্ধতা বাড়াতে সংশোধনী অর্ডারও প্রস্তুত হচ্ছে। এছাড়া, ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ সংশোধনের মাধ্যমে ৫০ শতাংশ স্বাধীন পরিচালক নিয়োগের বিধান আনা হচ্ছে। রাজনৈতিক ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকলেই বিনিয়োগ বাড়বে। নির্বাচন সামনে থাকায় বড় বিনিয়োগকারী আসার সম্ভাবনা কম হলেও কিছু বিনিয়োগ পাইপলাইনে রয়েছে।

‘আর্থিক খাতে কোনো সঙ্কট নেই। বাজারে তারল্য বৃদ্ধি পেলে শেয়ারবাজারও ঘুরে দাঁড়াবে। মূল্যস্ফীতি কমানোর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, এনবিআর সংস্কারে ভেতরের ‘শত্রু’ দমন করা হয়েছে এবং দ্রুত সংস্কার বাস্তবায়ন জরুরি’-উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি উল্লেখ করেন, টাকা ছাপানো ও ব্যবস্থাপনায় প্রতি বছর ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়, যা ক্যাশলেস অর্থনীতি চালু হলে উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে। হাউজিং খাতে বর্তমানে ঋণের পরিমাণ ৪ শতাংশ হলেও তা কমপক্ষে ২০ শতাংশে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

ডিজিটাল আর্থিক সেবা সম্প্রসারণে স্মার্টফোনের দাম ৬-৭ হাজার টাকায় নামিয়ে আনা এবং দ্রুতগতির ইন্টারনেট নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার কথা জানান গভর্নর। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের হার বাড়াতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, যদিও বর্তমানে তা ভারতের তুলনায় অনেক কম।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ডলারের বিনিময় হারের স্থিতিশীলতা, ব্যালেন্স অফ পেমেন্টে সাফল্য এবং আমদানি ও রপ্তানি বাড়ার তথ্য দেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘জোড়ালো অবস্থানের কারণে’ রেমিটেন্স বাড়ার কথা অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন।