ঢাকা ১০:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর: কূটনীতিতে অধ্যাপক ইউনূসের সফট পাওয়ার ও ভারসাম্যনীতি

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৭:০৬:০৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫
  • ৪৪ বার পড়া হয়েছে

গত বছরের ৮ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এক বছর পূর্ণ হচ্ছে আগামীকাল। এই এক বছরে কূটনীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান, ভারসাম্য রক্ষা এবং আন্তর্জাতিক মহলে অধ্যাপক ইউনূসের ব্যক্তিগত গ্রহণযোগ্যতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

তৌহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ এই সময়কালে একটি বাস্তবভিত্তিক, ভারসাম্যপূর্ণ এবং স্বার্থ-কেন্দ্রিক পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করেছে। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে আগের সরকারের তুলনায় আরও আত্মমর্যাদাশীল অবস্থান গ্রহণ করা হয়েছে। সীমান্ত হত্যা ও পুশ-ইন নিয়ে জোরালো প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। চিকিৎসা ও পণ্য কেনাকাটার জন্য ভারতের ওপর নির্ভরতা কমেছে বলেও জানান তিনি।

ড. ইউনূসের আন্তর্জাতিক খ্যাতিকে ‘একটি কূটনৈতিক সম্পদ’ হিসেবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, তার একটি ফোন কলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মুক্তি নিশ্চিত হয়েছে। বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও নাগরিক স্তরে তার গ্রহণযোগ্যতা বাংলাদেশের কূটনৈতিক তৎপরতায় সহায়ক হয়েছে।

চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জাতীয় স্বার্থে গড়ে তোলা হয়েছে, যা আগের মতোই অব্যাহত। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কও অব্যাহত আছে, তবে কোনো নির্দিষ্ট বলয়ে নিজেকে জড়ানোর পক্ষে নয় বাংলাদেশ। তিনি বলেন, “আমরা চীনের দিকে ঝুঁকছি না, আমরা আমাদের স্বার্থ রক্ষা করছি।”

পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে কূটনৈতিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা কোনো পক্ষপাত নয় বরং একটি ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতির অংশ। এ ছাড়া নিউজিল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার জহর বাহরুতে নতুন মিশন খোলার কাজ এগিয়ে চলেছে।

প্রবাসীদের দুর্ভোগ লাঘবে ওমানে ই-পাসপোর্ট সেবার উন্নয়ন এবং মিশনগুলোতে ছায়াযুক্ত অপেক্ষাকক্ষ নির্মাণসহ নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের ব্যস্ত মিশনে অতিরিক্ত কর্মকর্তা নিয়োগের প্রস্তাবও রয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গত এক বছরে চুক্তিভিত্তিক কোনো নিয়োগ দেওয়া হয়নি বলে জানান উপদেষ্টা। জনবল সীমিত হলেও মধ্যপ্রাচ্যে পোস্ট ফাঁকা রাখা হবে না বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে এখনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না হলেও রাখাইনে স্থিতিশীলতা ফিরলেই প্রত্যাবাসনের বাস্তব সম্ভাবনা তৈরি হবে বলে মত দেন তৌহিদ।

Tag :

অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর: কূটনীতিতে অধ্যাপক ইউনূসের সফট পাওয়ার ও ভারসাম্যনীতি

আপডেট সময় : ০৭:০৬:০৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫

গত বছরের ৮ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এক বছর পূর্ণ হচ্ছে আগামীকাল। এই এক বছরে কূটনীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান, ভারসাম্য রক্ষা এবং আন্তর্জাতিক মহলে অধ্যাপক ইউনূসের ব্যক্তিগত গ্রহণযোগ্যতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

তৌহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ এই সময়কালে একটি বাস্তবভিত্তিক, ভারসাম্যপূর্ণ এবং স্বার্থ-কেন্দ্রিক পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করেছে। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে আগের সরকারের তুলনায় আরও আত্মমর্যাদাশীল অবস্থান গ্রহণ করা হয়েছে। সীমান্ত হত্যা ও পুশ-ইন নিয়ে জোরালো প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। চিকিৎসা ও পণ্য কেনাকাটার জন্য ভারতের ওপর নির্ভরতা কমেছে বলেও জানান তিনি।

ড. ইউনূসের আন্তর্জাতিক খ্যাতিকে ‘একটি কূটনৈতিক সম্পদ’ হিসেবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, তার একটি ফোন কলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মুক্তি নিশ্চিত হয়েছে। বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও নাগরিক স্তরে তার গ্রহণযোগ্যতা বাংলাদেশের কূটনৈতিক তৎপরতায় সহায়ক হয়েছে।

চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জাতীয় স্বার্থে গড়ে তোলা হয়েছে, যা আগের মতোই অব্যাহত। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কও অব্যাহত আছে, তবে কোনো নির্দিষ্ট বলয়ে নিজেকে জড়ানোর পক্ষে নয় বাংলাদেশ। তিনি বলেন, “আমরা চীনের দিকে ঝুঁকছি না, আমরা আমাদের স্বার্থ রক্ষা করছি।”

পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে কূটনৈতিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা কোনো পক্ষপাত নয় বরং একটি ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতির অংশ। এ ছাড়া নিউজিল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার জহর বাহরুতে নতুন মিশন খোলার কাজ এগিয়ে চলেছে।

প্রবাসীদের দুর্ভোগ লাঘবে ওমানে ই-পাসপোর্ট সেবার উন্নয়ন এবং মিশনগুলোতে ছায়াযুক্ত অপেক্ষাকক্ষ নির্মাণসহ নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের ব্যস্ত মিশনে অতিরিক্ত কর্মকর্তা নিয়োগের প্রস্তাবও রয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গত এক বছরে চুক্তিভিত্তিক কোনো নিয়োগ দেওয়া হয়নি বলে জানান উপদেষ্টা। জনবল সীমিত হলেও মধ্যপ্রাচ্যে পোস্ট ফাঁকা রাখা হবে না বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে এখনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না হলেও রাখাইনে স্থিতিশীলতা ফিরলেই প্রত্যাবাসনের বাস্তব সম্ভাবনা তৈরি হবে বলে মত দেন তৌহিদ।