অভিযোগে জর্জরিত মাসুদ রানা, গণপূর্ত অধিদপ্তরের শীর্ষ দুর্নীতিবাজদের একজন হিসেবে পরিচিত! সরকারি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের বাজেট, টেন্ডার, জমি অধিগ্রহণ ও ঠিকাদার নিয়োগে ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে গণপূর্ত অধিদপ্তরের ঢাকা নগর বিভাগ-৪–এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুদ রানার বিরুদ্ধে। অধিদপ্তরের অভ্যন্তরে তাকে ঘিরে চলছে একটি বেপরোয়া সিন্ডিকেট, যার কাজ কমিশন ভিত্তিক বরাদ্দ চালানো এবং ন্যায্য পাওনা খর্ব করে ফায়দা লুটে নেওয়া।
এই সিন্ডিকেট এতটাই বেপরোয়া যে কোন নিয়ম কানুনকে তারা তোয়াক্কা করছে না। একটি বিশেষ অঞ্চলের নামীদামী কিছু ব্যক্তিদের নাম ব্যবহার করে এরা ফায়দা হাসিল করছে। গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রে একটি সরকারকে নিজ দেশের জনগনের সুবিধার্তে অনেক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করতে হয়। এক্ষেত্রে অধিকাংশ উন্নয়নকাজই গণপূর্ত অধিদপ্তরের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করে থাকে সরকার। সরকারের গৃহীত ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নের জন্য অন্যতম একটি কর্মসূচী হলো টেকসই উন্নয়ন। টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত হচ্ছে অবকাঠামো ও নির্মান খাত। আর এই গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো বাস্তবায়নে মূখ্য ভূমিকা পালন করে গনপূর্ত অধিদপ্তর। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) রাজধানীর ডেমরা ও রামপুরা সেতু-বনশ্রী-শেখেরজায়গা-আমুলিয়া-হাতিরঝিল সড়ক চার লেন করার প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার ২৮ জানুয়ারি ২০২০ রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়।
২০২৩ সালের জুন মাসে ১৪ তারিখে এই বার্ষিক কর্মসম্পাদন সংক্রান্ত সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয় হাতিরঝিল-রামপুরা বনশ্রী-শেখের জায়গা, আমুলিয়া, ডেমরা মহাসড়ক নির্মান প্রকল্পে তাড়াবো লিংক মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণের জন্য সহায়ক প্রকল্প এর জন্য রাস্তার উভয় পাশে অধিগ্রহনকৃত জমির স্থাপনা মূল্য নির্ধারনের সময় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের দূর্নীতিবাজ রফিকুজ্জামান উপ-সহকারী প্রকৌশলী এল এ শাখার কিছু দূর্নীতিবাজ সার্ভেয়ারের সহযোগীতায় দালাল চক্রের মাধ্যেমে নামমাত্র দাম কমিয়ে তা বাস্তবায়ন করে। গণপূর্ত অঞ্চল চার এর মিস্টার ১০% ঘুষখোর কর্মকর্তা হিসেবে ব্যাপক পরিচিত নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাসুদ রানার তত্ত্বাবধানেই এসব অপকর্ম সংগঠিত হচ্ছে। নগর গণপূর্ত বিভাগ ঢাকা-৪ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাসুদ রানার অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে এই নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগের আমলে মহা দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের তালিকায় রয়েছে মাসুদ রানার নাম। জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে থাকা ঢাকা নগর গণপূর্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাসুদ রানা গণপূর্তের মিস্টার ১০% ঘুষখোর কর্মকর্তা হিসেবে ব্যাপক পরিচিত। অভিযোগ রয়েছে, ঢাকা শেরেবাংলা নগর গণপূর্ত বিভাগ-৩ এ থাকা অবস্থায় তিনি বিভিন্ন প্রকল্পে প্রায় হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের টেন্ডারে অতিরিক্ত ব্যয়ের প্রাক্কলন, টেন্ডারের তথ্য ফাঁস, দর-কষাকষির নামে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি। বর্তমানে ঢাকা নগর গণপূর্ত বিভাগ-৪ এর নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাসুদ রানা গত- জুলাই মাসে মিরপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমানোর জন্য আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের আর্থিকভাবে সহায়তা করেছেন আওয়ামী লীগের এমপি ও যুবলীগের সভাপতি মাঈনুল হোসেন খান নিখিলের মাধমে। এনিয়ে শেরে বাংলা নগর থানার সামনে তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল বের করেছিলো সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে প্রকৌশলী মোঃ মাসুদ রানাকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। রফিকুজ্জামানকেও বার বার ফোন দিয়ে পাওয়া যায়নি। ক্ষুদে বার্তারও রিপ্লাই দেননি। মাসুদ রানার দূর্নীতির ব্যপারে দুর্নীতি দমন (দুদক) এর কার্যালয় এক উপ-পরিচালকের দৃষ্টি আর্কষন করা হলে তিনি বলেন, অভিযোগ পেলে বা পত্র-পত্রিকায় এ সংক্রান্ত কোন প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে আইনানুনাগ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।

নিজস্ব প্রতিবেদক 















