ঢাকা ০২:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ব্যারিস্টার আরমানকে গুম ও টিএফআই সেলে আটক রাখার বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন সাবেক আইজিপি

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৬:৩৩:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫
  • ২৫ বার পড়া হয়েছে

ব্যারিস্টার আরমানের গুম এবং টিএফআই সেলে আটক থাকার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এক মামলায় চলতি বছরের ২৪ মার্চ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে দেওয়া এক ৫ পৃষ্ঠার জবানবন্দিতে তিনি এই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেন।

মামুন জানান, ব্যারিস্টার আরমানের গুমের ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন সাবেক সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক সিদ্দিকি, যিনি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মাধ্যমে এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতেন। আইজিপি থাকা সত্ত্বেও মামুন বলেন, তিনি এসব ঘটনা সম্পর্কে পুরোপুরি অবহিত ছিলেন না এবং তার কাছে সঠিক তথ্য আসেনি।

মামুন তার জবানবন্দিতে বলেন, “আমার সময়, আমি জানতাম ব্যারিস্টার আরমান টিএফআই সেলে আটক আছেন। তবে তাকে তুলে আনা হয়নি, বরং তার পূর্ববর্তী র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ আমাকে অবহিত করেছিলেন।” তিনি আরও জানান, “এটি জানার পর আমি প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিকির সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলি, তবে তিনি এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেননি।”

সাবেক আইজিপি দাবি করেছেন যে, তারিক সিদ্দিকির কাছ থেকে কিছু নির্দেশনা আসত এবং এগুলো বাস্তবায়িত হত গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মাধ্যমে। যদিও র‌্যাব পুলিশ বিভাগের অধীনে ছিল, তবে অনেক সময় র‌্যাবের কর্মকাণ্ড পুলিশের চেইন অব কমান্ডের বাইরে চলে যেত।

তিনি আরও বলেন, “গুম, আটকে রাখা এবং নির্যাতনের মতো কার্যক্রমের বেশিরভাগ সিদ্ধান্ত অন্য বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে আসত। এমনকি পুলিশ প্রধান হয়েও, আমি এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারিনি।”

মামুন জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন যে, র‌্যাবের কিছু কর্মকর্তার বিশেষভাবে গুম ও নির্যাতনে জড়িত থাকার তথ্য ছিল, এবং তাদের বেশিরভাগই ছিলেন সামরিক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, “এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বাস্তবায়ন মেজর জেনারেল তারিক সিদ্দিকি সরাসরি গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে করতেন, এবং পুলিশ বিভাগের আইজিপি হওয়ার পরও আমাকে এসব বিষয়ে পূর্ণরূপে অবহিত করা হয়নি।”

এছাড়া, মামুন আরও দাবি করেন যে, র‌্যাবের বেশিরভাগ আভিযানিক কার্যক্রম গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য এবং পরামর্শের ভিত্তিতে পরিচালিত হত এবং আইজিপি হিসেবে তার সঙ্গে কোনো পরামর্শ করা হতো না।

এ প্রতিবেদনটি সরকারের কার্যক্রমের প্রতি নতুন একটি প্রশ্ন তোলে এবং দেশব্যাপী আইনের শাসন ও মানবাধিকার সংক্রান্ত আলোচনা নতুন করে শুরু হতে পারে।অনলাইন ডেস্ক

Tag :

ব্যারিস্টার আরমানকে গুম ও টিএফআই সেলে আটক রাখার বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন সাবেক আইজিপি

আপডেট সময় : ০৬:৩৩:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫

ব্যারিস্টার আরমানের গুম এবং টিএফআই সেলে আটক থাকার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এক মামলায় চলতি বছরের ২৪ মার্চ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে দেওয়া এক ৫ পৃষ্ঠার জবানবন্দিতে তিনি এই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেন।

মামুন জানান, ব্যারিস্টার আরমানের গুমের ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন সাবেক সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক সিদ্দিকি, যিনি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মাধ্যমে এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতেন। আইজিপি থাকা সত্ত্বেও মামুন বলেন, তিনি এসব ঘটনা সম্পর্কে পুরোপুরি অবহিত ছিলেন না এবং তার কাছে সঠিক তথ্য আসেনি।

মামুন তার জবানবন্দিতে বলেন, “আমার সময়, আমি জানতাম ব্যারিস্টার আরমান টিএফআই সেলে আটক আছেন। তবে তাকে তুলে আনা হয়নি, বরং তার পূর্ববর্তী র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ আমাকে অবহিত করেছিলেন।” তিনি আরও জানান, “এটি জানার পর আমি প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিকির সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলি, তবে তিনি এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেননি।”

সাবেক আইজিপি দাবি করেছেন যে, তারিক সিদ্দিকির কাছ থেকে কিছু নির্দেশনা আসত এবং এগুলো বাস্তবায়িত হত গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মাধ্যমে। যদিও র‌্যাব পুলিশ বিভাগের অধীনে ছিল, তবে অনেক সময় র‌্যাবের কর্মকাণ্ড পুলিশের চেইন অব কমান্ডের বাইরে চলে যেত।

তিনি আরও বলেন, “গুম, আটকে রাখা এবং নির্যাতনের মতো কার্যক্রমের বেশিরভাগ সিদ্ধান্ত অন্য বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে আসত। এমনকি পুলিশ প্রধান হয়েও, আমি এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারিনি।”

মামুন জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন যে, র‌্যাবের কিছু কর্মকর্তার বিশেষভাবে গুম ও নির্যাতনে জড়িত থাকার তথ্য ছিল, এবং তাদের বেশিরভাগই ছিলেন সামরিক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, “এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বাস্তবায়ন মেজর জেনারেল তারিক সিদ্দিকি সরাসরি গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে করতেন, এবং পুলিশ বিভাগের আইজিপি হওয়ার পরও আমাকে এসব বিষয়ে পূর্ণরূপে অবহিত করা হয়নি।”

এছাড়া, মামুন আরও দাবি করেন যে, র‌্যাবের বেশিরভাগ আভিযানিক কার্যক্রম গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য এবং পরামর্শের ভিত্তিতে পরিচালিত হত এবং আইজিপি হিসেবে তার সঙ্গে কোনো পরামর্শ করা হতো না।

এ প্রতিবেদনটি সরকারের কার্যক্রমের প্রতি নতুন একটি প্রশ্ন তোলে এবং দেশব্যাপী আইনের শাসন ও মানবাধিকার সংক্রান্ত আলোচনা নতুন করে শুরু হতে পারে।অনলাইন ডেস্ক