একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা মোবারক হোসেনকে খালাস দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এই রায় দেন। একইসঙ্গে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ বাতিল করেন আদালত।
এর আগে, ২০১৪ সালের ২৪ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মোবারক হোসেনকে পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে দুটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে একটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড এবং অপরটিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেছিল।
১ নম্বর অভিযোগে মোবারকের বিরুদ্ধে ছিল আখাউড়ার টান মান্দাইল গ্রামে ৩৩ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে গঙ্গাসাগর দীঘির পাড়ে গুলি করে হত্যা করার অভিযোগ, যার জন্য তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
৩ নম্বর অভিযোগে তাকে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগী আব্দুল খালেককে অপহরণ ও হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
অপর তিনটি অভিযোগ (২, ৪ ও ৫ নম্বর) প্রমাণিত না হওয়ায় তখনই তাকে সেগুলো থেকে খালাস দেওয়া হয়েছিল।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন মোবারক হোসেন। চলতি বছরের ৮ জুলাই তার আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়। দীর্ঘ শুনানি ও দলিলপত্র পর্যালোচনার পর আজ আপিল বিভাগ তাকে সকল অভিযোগ থেকে খালাস দেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় অনুযায়ী, মুক্তিযুদ্ধের সময় মোবারক হোসেন জামায়াতে ইসলামী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেও ছিলেন।
সুপ্রিম কোর্টের এই রায় দেশে নতুন করে আলোচনা সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে এমন একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও আপিলে খালাস পাওয়াকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মহল থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া এসেছে।

অনলাইন ডেস্ক 















