ঢাকা ০৫:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিপৎসীমা ছাড়িয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের সব নদীর পানি, প্লাবিত নগরীর বিভিন্ন এলাকা

  • অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৯:৪০:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
  • ২৪ বার পড়া হয়েছে

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে দক্ষিণাঞ্চলের সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, ফলে নদীতীরবর্তী জনপদ এবং নগরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বরিশাল নগরীর সদর রোড, ভাটিখানা, পলাশপুর ও সাগরদি এলাকায় হাঁটুসমান পানি জমে গেছে, জনজীবন হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত।

নদীর পানির উচ্চতা বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপরে

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-প্রকৌশলী তাইজুল ইসলাম জানান, শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিকেল ৩টা থেকে মেঘনা, তেতুলিয়াসহ দক্ষিণাঞ্চলের সব নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে। কীর্তনখোলা নদীর পানি বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হয়।

পানি বৃদ্ধির ফলে বিভিন্ন নিচু এলাকায় বসতবাড়ি, দোকানপাট ও রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। স্থানীয়রা জানান, তিন দশকের মধ্যে এমন উচ্চতায় জোয়ারের পানি উঠতে দেখা যায়নি।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস: ভারী বর্ষণের আশঙ্কা

বরিশাল আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক মিলন হাওলাদার জানান,“শুক্রবার বিকেল ৩টায় সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার বাতাসের গতিবেগ রেকর্ড করা হয়েছে। আগের ২৪ ঘণ্টায় ২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বরিশাল ও খুলনা বিভাগে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।”

আবহাওয়াবিদরা আশঙ্কা করছেন, অতিবৃষ্টির সঙ্গে উচ্চ জোয়ার মিলিয়ে প্লাবনের মাত্রা আরও বাড়তে পারে, বিশেষত বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা ও ঝালকাঠির মতো নদীতীরবর্তী জেলাগুলোতে।

লঞ্চ চলাচল চালু, স্পিডবোট বন্ধ

বরিশাল নদীবন্দর কর্মকর্তা শেখ সেলিম রেজা জানান,“নদীতে পানি অস্বাভাবিকভাবে বাড়লেও এখনো লঞ্চ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে স্পিডবোট চলাচল শুক্রবার সকাল থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে।”

জনদুর্ভোগ চরমে

পানি ঢুকে পড়ায় বহু বাড়িঘর, দোকান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। নাগরিকরা জরুরি প্রয়োজনেও ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। স্থানীয় প্রশাসন বলছে, পানির উচ্চতা কমলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হবে, তবে আরও বৃষ্টি হলে দুর্ভোগ বেড়ে যেতে পারে

Tag :

বিপৎসীমা ছাড়িয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের সব নদীর পানি, প্লাবিত নগরীর বিভিন্ন এলাকা

আপডেট সময় : ০৯:৪০:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে দক্ষিণাঞ্চলের সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, ফলে নদীতীরবর্তী জনপদ এবং নগরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বরিশাল নগরীর সদর রোড, ভাটিখানা, পলাশপুর ও সাগরদি এলাকায় হাঁটুসমান পানি জমে গেছে, জনজীবন হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত।

নদীর পানির উচ্চতা বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপরে

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-প্রকৌশলী তাইজুল ইসলাম জানান, শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিকেল ৩টা থেকে মেঘনা, তেতুলিয়াসহ দক্ষিণাঞ্চলের সব নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে। কীর্তনখোলা নদীর পানি বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হয়।

পানি বৃদ্ধির ফলে বিভিন্ন নিচু এলাকায় বসতবাড়ি, দোকানপাট ও রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। স্থানীয়রা জানান, তিন দশকের মধ্যে এমন উচ্চতায় জোয়ারের পানি উঠতে দেখা যায়নি।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস: ভারী বর্ষণের আশঙ্কা

বরিশাল আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক মিলন হাওলাদার জানান,“শুক্রবার বিকেল ৩টায় সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার বাতাসের গতিবেগ রেকর্ড করা হয়েছে। আগের ২৪ ঘণ্টায় ২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বরিশাল ও খুলনা বিভাগে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।”

আবহাওয়াবিদরা আশঙ্কা করছেন, অতিবৃষ্টির সঙ্গে উচ্চ জোয়ার মিলিয়ে প্লাবনের মাত্রা আরও বাড়তে পারে, বিশেষত বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা ও ঝালকাঠির মতো নদীতীরবর্তী জেলাগুলোতে।

লঞ্চ চলাচল চালু, স্পিডবোট বন্ধ

বরিশাল নদীবন্দর কর্মকর্তা শেখ সেলিম রেজা জানান,“নদীতে পানি অস্বাভাবিকভাবে বাড়লেও এখনো লঞ্চ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে স্পিডবোট চলাচল শুক্রবার সকাল থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে।”

জনদুর্ভোগ চরমে

পানি ঢুকে পড়ায় বহু বাড়িঘর, দোকান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। নাগরিকরা জরুরি প্রয়োজনেও ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। স্থানীয় প্রশাসন বলছে, পানির উচ্চতা কমলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হবে, তবে আরও বৃষ্টি হলে দুর্ভোগ বেড়ে যেতে পারে