বাংলাদেশে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা গোপন রাখা অসম্ভব—এ মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, “দুর্যোগ বা দুর্ঘটনার প্রেক্ষাপটে তথ্য ধামাচাপা দেওয়া কখনোই সম্ভব নয়। জনগণের অংশগ্রহণ, হাসপাতাল ও পরিবারের তথ্য—সব মিলিয়ে সত্য বেরিয়ে আসে।”
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষার্থীদের চলমান ক্ষোভ ও শোকাবহ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে যান অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও ড. সি আর আবরার। তাদের সঙ্গে ছিলেন প্রেস সচিব শফিকুল আলমসহ প্রেস উইংয়ের আরও তিনজন। তবে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের ঘেরাওয়ে তাঁরা টানা ৯ ঘণ্টা অবরুদ্ধ ছিলেন।
আজ বুধবার (২৩ জুলাই) দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে সেই পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন শফিকুল আলম। তিনি লেখেন—“আমরা মাইলস্টোন কলেজে গিয়েছিলাম শোকাহত পরিবারগুলোর সঙ্গে দেখা করতে, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের কথা শুনতে যারা এখনও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। ঘটনাস্থলের পরিবেশ ছিল শোক ও ক্ষোভে ভারী।”
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন—“২০০২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত দুর্যোগ-দুর্ঘটনার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, বাংলাদেশে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা গোপন রাখা কার্যত অসম্ভব।”
শফিকুল আলম বলেন,“মাইলস্টোন কলেজ চাইলে প্রতিদিনের উপস্থিতি রেকর্ড ধরে নিখোঁজ শিক্ষার্থী শনাক্তে কাজ করতে পারে। হাসপাতাল, পরিবার ও স্থানীয় প্রশাসনের তথ্য একত্র করে সত্য জানা সম্ভব।”
তিনি জানান,“উপদেষ্টারা চাইলেই আগে ফিরে আসতে পারতেন, কিন্তু তাঁরা বলপ্রয়োগ না করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাধান নিশ্চিত করতেই ছিলেন। প্রয়োজনে তাঁরা আরও সময় কাটাতে প্রস্তুত ছিলেন।”
হতাহত ও নিখোঁজ সংক্রান্ত তথ্য স্বচ্ছভাবে প্রকাশের লক্ষ্যে কলেজে একটি কন্ট্রোল রুম স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন উপদেষ্টারা।
শফিকুল লিখেছেন—“এই কন্ট্রোল রুমে তথ্য আপডেট করা হবে এবং তা কলেজ রেজিস্ট্রারের ডেটার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে। বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদেরও যুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”
দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণ করে তিনি বলেন,“এটি একটি জাতীয় ট্র্যাজেডি। আমরা সকল নিহতকে শহীদ হিসেবে শ্রদ্ধা জানাই। ভবিষ্যতে যাতে এমন দুর্ঘটনা না ঘটে, সেজন্য আমাদের সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন,“সরকার আকাশ প্রতিরক্ষা ও জাতীয় নিরাপত্তা জোরদারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং বিমান-সম্পর্কিত দুর্ঘটনার সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনার অঙ্গীকার করেছে।”

অনলাইন ডেস্ক 















