ঐতিহাসিক জুলাই আন্দোলনে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গোপন নির্দেশনা ও যোগাযোগ নিয়ে চলছে গভীর তদন্ত। এই ঘটনায় তিন প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তির সাতটি মোবাইল ফোনসেট ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে, যাতে পাওয়া গেছে গুরুত্বপূর্ণ গোপন কল রেকর্ড ও বার্তা আদান-প্রদানের প্রমাণ।
ফরেনসিকে পাঠানো ফোনগুলো সাবেক ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু, তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং ছাত্রলীগ নেতা তানভীর হাসান সৈকতের। তদন্ত সূত্র জানায়, এই তিনজনই আন্দোলন দমন ও গুলি চালনার নির্দেশনাসহ নানা সংবেদনশীল বিষয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে সরাসরি ও গোপন যোগাযোগে যুক্ত ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তাদের মতে, ওই সময় শেখ হাসিনা হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম, সিগন্যাল ও ভাইবারে একাধিকবার বার্তা আদান-প্রদান করেন এবং ইন্টারনেট বন্ধ করে ব্লকরেইড চালানোর নির্দেশনা দেন। বিশেষ করে পলকের ফোনে পাওয়া গেছে আইফোন ১৫ প্রো এবং স্যামসাং এস২৪ আল্ট্রা মডেলের তিনটি ডিভাইস, যেগুলোতে এ ধরনের অ্যাপস ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। যদিও ডেটা মুছে ফেলা হয়েছিল, ফরেনসিকের মাধ্যমে তা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
২০২৪ সালের জুলাইয়ে পল্টন থানায় রিকশাচালক কামাল মিয়া হত্যা মামলায় এই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাদের মোবাইল ফোন উদ্ধার করে সিআইডি ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়, যাতে মুছে ফেলা বার্তা, ছবি, কল রেকর্ড, ভিডিও ও নথিপত্র উদ্ধার করা যায়।
ডিবির তদন্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর আব্দুল্লাহেল বাকী জানান, আদালতের নির্দেশনায় ফোনগুলোর ফরেনসিক পরীক্ষা চলছে এবং রিপোর্ট অনুযায়ী চার্জশিটে বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
এ বিষয়ে মতামত জানাতে গিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ প্রসিকিউটরিয়াল টিমের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজি বলেন, “মুছে ফেলা হলেও ডিজিটাল প্রমাণ আদালতে ম্যাটেরিয়াল ফ্যাক্টস হিসাবে বিবেচিত হবে। এই মামলায় এসব তথ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”

অনলাইন ডেস্ক 















