ঢাকা ০৩:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এনবিআর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীরা

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৬:৫০:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫
  • ২১৮ বার পড়া হয়েছে

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খানের পদত্যাগ দাবি করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এবং বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা। তারা অভিযোগ করেন, চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান সংলাপের পরিবর্তে সংঘাতকে উসকে দিয়েছেন এবং দীর্ঘদিনের চলমান সমস্যাগুলোর কোনো সমাধানের চেষ্টা না করে বরং পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী নেতা বলেন, “এনবিআরে অনেক সৎ, যোগ্য ও দক্ষ সদস্য রয়েছেন, যারা ট্যাক্স, ভ্যাট ও কাস্টমস বিভাগের নেতৃত্ব দিতে সক্ষম। কিন্তু বর্তমান চেয়ারম্যানের একক সিদ্ধান্ত ও অসহযোগিতার কারণে প্রতিষ্ঠানটি অচলাবস্থার দিকে যাচ্ছে।”

বিভিন্ন ব্যবসায়ী নেতা এবং এনবিআর কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন, বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তা ও অন্যান্য কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার বদলে চেয়ারম্যান সংঘাতমূলক আচরণ করেছেন। ঐক্য পরিষদের একাধিক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ও লিখিত আবেদনেও আলোচনার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বরং কর্মকর্তাদের নিচতলায় বসে মিটিং করতে বাধ্য করা হয়েছে এবং একপর্যায়ে তাদের ভবনের বাইরে রাস্তায় আন্দোলনে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।

চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খানের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ উঠেছে, তিনি আন্দোলনরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা না করে নিজের দপ্তরে কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে অবস্থান নিয়েছেন, ভবনের মেইন গেট ও লিফট বন্ধ রেখেছেন এবং সাধারণ ব্যবসায়ীদেরকেও প্রবেশে বাধা দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ঐক্য পরিষদের নেতারা তাকে “অবাঞ্ছিত” ঘোষণা করেছেন এবং অবিলম্বে পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন।

মাঠ পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অধিকাংশ কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ এই চেয়ারম্যান আব্দুর রহমানকে চাচ্ছেন না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক এনবিআর কর্মকর্তা জানান, শান্তিপূর্ণ এই আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যাওয়া বা বিতর্কিত করার পেছনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কিছু অসাধু মেম্বার পর্যায়ের সদস্য জড়িত রয়েছেন।

অপরদিকে বিশেষ সূত্রের মাধ্যমে জানা যায়, এই আন্দোলনকে দমিয়ে রাখার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান কতিপয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ দায়ের করে হয়রানি এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছেন।

এ প্রসঙ্গে ব্যবসায়ী নেতারা প্রশ্ন তোলেন, “চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি আন্দোলন যখন দীর্ঘদিন ধরে চলছে, তখন হঠাৎ করেই আজ কেন চিঠি দেওয়া হলো?” একই দিনে এনবিআর চেয়ারম্যান মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে একটি চিঠিতে এবং মৌখিক নির্দেশে দায়িত্বে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন, যা পরিস্থিতিকে তার নিজের ভিতরে ভিতরে কর্মকর্তাকে নিপীড়ন করে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট মহল থেকে দাবি উঠেছে, এনবিআর চেয়ারম্যানের ভূমিকা নিরপেক্ষ না, তদন্তের মাধ্যমে মূল্যায়ন করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

 

 

Tag :

এনবিআর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীরা

আপডেট সময় : ০৬:৫০:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খানের পদত্যাগ দাবি করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এবং বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা। তারা অভিযোগ করেন, চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান সংলাপের পরিবর্তে সংঘাতকে উসকে দিয়েছেন এবং দীর্ঘদিনের চলমান সমস্যাগুলোর কোনো সমাধানের চেষ্টা না করে বরং পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী নেতা বলেন, “এনবিআরে অনেক সৎ, যোগ্য ও দক্ষ সদস্য রয়েছেন, যারা ট্যাক্স, ভ্যাট ও কাস্টমস বিভাগের নেতৃত্ব দিতে সক্ষম। কিন্তু বর্তমান চেয়ারম্যানের একক সিদ্ধান্ত ও অসহযোগিতার কারণে প্রতিষ্ঠানটি অচলাবস্থার দিকে যাচ্ছে।”

বিভিন্ন ব্যবসায়ী নেতা এবং এনবিআর কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন, বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তা ও অন্যান্য কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার বদলে চেয়ারম্যান সংঘাতমূলক আচরণ করেছেন। ঐক্য পরিষদের একাধিক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ও লিখিত আবেদনেও আলোচনার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বরং কর্মকর্তাদের নিচতলায় বসে মিটিং করতে বাধ্য করা হয়েছে এবং একপর্যায়ে তাদের ভবনের বাইরে রাস্তায় আন্দোলনে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।

চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খানের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ উঠেছে, তিনি আন্দোলনরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা না করে নিজের দপ্তরে কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে অবস্থান নিয়েছেন, ভবনের মেইন গেট ও লিফট বন্ধ রেখেছেন এবং সাধারণ ব্যবসায়ীদেরকেও প্রবেশে বাধা দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ঐক্য পরিষদের নেতারা তাকে “অবাঞ্ছিত” ঘোষণা করেছেন এবং অবিলম্বে পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন।

মাঠ পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অধিকাংশ কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ এই চেয়ারম্যান আব্দুর রহমানকে চাচ্ছেন না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক এনবিআর কর্মকর্তা জানান, শান্তিপূর্ণ এই আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যাওয়া বা বিতর্কিত করার পেছনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কিছু অসাধু মেম্বার পর্যায়ের সদস্য জড়িত রয়েছেন।

অপরদিকে বিশেষ সূত্রের মাধ্যমে জানা যায়, এই আন্দোলনকে দমিয়ে রাখার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান কতিপয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ দায়ের করে হয়রানি এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছেন।

এ প্রসঙ্গে ব্যবসায়ী নেতারা প্রশ্ন তোলেন, “চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি আন্দোলন যখন দীর্ঘদিন ধরে চলছে, তখন হঠাৎ করেই আজ কেন চিঠি দেওয়া হলো?” একই দিনে এনবিআর চেয়ারম্যান মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে একটি চিঠিতে এবং মৌখিক নির্দেশে দায়িত্বে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন, যা পরিস্থিতিকে তার নিজের ভিতরে ভিতরে কর্মকর্তাকে নিপীড়ন করে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট মহল থেকে দাবি উঠেছে, এনবিআর চেয়ারম্যানের ভূমিকা নিরপেক্ষ না, তদন্তের মাধ্যমে মূল্যায়ন করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।